রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
নোটিশ ::
বাংলাদেশ সারাবেলা ডটকমে আপনাদের স্বাগতম। সারাদেশের জেলা,উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে  প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন - ০১৭৯৭-২৮১৪২৮ নাম্বারে
সংবাদ শিরোনাম ::
দিগরপানখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন বশেমুরবিপ্রবি’তে তিন দিনব্যাপী সাইকোমেট্রিক টুলস ও সাইকোলজিক্যাল এসেসমেন্ট ট্রেনিং সম্পন্ন চকরিয়ায় মাষ্টার মাইন্ড অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরিতে ২ নির্মাণ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু নোবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ হলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ কেআইবি’তে এলডিডিপির মিডটার্ম রিভিউ কর্মশালা বশেমুরবিপ্রবি রোভার-ইন-কাউন্সিলের সভাপতি অনিক সম্পাদক ফারিহা চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালে ব্যাপক পরিবহন চাঁদাবাজি, অতিষ্ঠ চালক-মালিকসহ সাধারণ যাত্রীরা রবিতে ইকোন ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত  ডেঙ্গারগ্রাম ডিগ্রি কলেজে অভিভাবক ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক উপায়ে শেরপুর জেলা ছাত্র কল্যাণ সংসদ বশেমুরবিপ্রবির নয়া নেতৃত্ব নির্বাচিত রবির অর্থনীতি বিভাগে সেমিনার অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ কয়রায় খাস জমিতে ভবন নির্মাণ, ব্যবস্থা নেয়নি ইউএনও চকরিয়ায় বিএনপি নেতার উপর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলা; চমেকে প্রেরণ লামায় জায়গা-জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৭ স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে রবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন শিক্ষার্থীর আকস্মিক মৃত্যুতে নোবিপ্রবি প্রশাসনের অনুদান সাম্য ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ছাত্রদলের নতুন সাংগঠনিক টিম গঠন চকরিয়ায় বিএনপির ঘরে আওয়ামীগের গোপন সোর্স বশেমুরবিপ্রবি সেইভ ইয়ুথের নেতৃত্বে সজল-সামিরা পরীক্ষা শেষে ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী ২ বন্ধু নিহত গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি)’র চকরিয়া উপজেলা কমিটি গঠন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের ফ্রেশার্স ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত

দালালের খপ্পরে মৃত্যু যেন ভুল পথে না হয়!

বাংলাদেশ সারাবেলা বিশেষ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৬২০ ০০০ বার

দালালের খপ্পরে মৃত্যু যেন ভুল পথে না হয়!

পৃথিবীতে সবচেয়ে স্বাভাবিক জিনিস হল মৃত্যু। আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক জিনিস হল বেঁচে থাকা। কেননা প্রত্যেকেই একথা বিশ্বাস করে  যে মৃত্যু অনিবার্য।আর  আমরা অনেক সময় বলে থাকি “অস্বাভাবিক মৃত্যু ,অকাল মৃত্যু” কথাটি আসলে ঠিক নয়। পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে যত মানুষ এসেছেন সবাই মৃত্যুবরণ করেছেন। ছাত্র-শিক্ষক, রাজা -বাদশা, শাসক- শাসিত , হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান,মুসলমান যেই হোক না কেন?

জীবনের মূল্য বোঝাতে গিয়ে হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাম দেশের সফরের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। তৎকালীন সময়ে শামদেশ বলতে- বর্তমান সময়ের সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে বুঝানো হতো। অবশ্য সে সময়ের শামদেশের সবচেয়ে বড় অংশ বর্তমান সময়ের সিরিয়া হওয়ার কারণেই সিরিয়াকে শাম বলা হয়।ইসলামের দ্বিতীয়  খলিফা হযরত ওমর  রাদিয়াল্লাহু আনহু, উনার শাসনামলে কোন এক সময় শাম দেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। ওখানে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী জঙ্গলে থাকেতন, সাধনা করতেন, কম খাইতেন কম ঘুমাইতেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু উনার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। উনি যে চেষ্টা,সাধনা করতেন (সেটা উনার) চেহারা দেখে বুঝতে পারলেন। যে কম খায়, কম ঘুমায় চেহারায় তার এরকম দুর্বলতার লক্ষণ থাকে, চেহারা দেখে তা বুঝা যায়। তো উনার চেহারার দিকে তাকিয়ে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কাঁদতে লাগলেন। (পাদ্রী)  ছিল একজন খ্রিস্টান আর আরবও নয়। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর সাথে আরো অনেকেই ছিলেন ।তাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন  বললো- ‘উনি তো খ্রিষ্টান’। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন- ‘আমি কেমন করে কাঁদবো না!’ “عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ تَصْلَى نَارًا حَامِيَةً” ,”অর্থ কাজ করে,  কষ্ট করে জাহান্নামের আগুনে যাবে”, আমি কেমন করে কাঁদবো না!’পাদ্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন ,”আমি আমার শিক্ষাগুরু কথার উপর ভিত্তি করে আমার জীবনকে উৎসর্গ করতে চাই”! তাকে প্রশ্ন করা হলো কেন? পাদ্রী উত্তর দিয়েছিলেন ,জানিনা!

সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে জীবন দিয়েছেন,জীবনের মূল্য অনেক। জীবনকে নিজের ইচ্ছামত অথবা অন্য কারো ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে মৃত্যুর কোলে ঢেলে দেওয়া কখনোই জ্ঞানী মানুষের কাজ হতে পারে না? বিভিন্ন প্রকার আন্দোলনর মাধ্যমে মানুষ তার দাবী আদায় করতে না পারলে সর্বশেষ চেষ্টা হিসাবে তার জীবনকে শেষ করে দিতে চাই।  একজন বুদ্ধিমান মানুষ কখনই এ কাজ করতে পারে না? আমি  শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি যে, তারা প্রফেসর ড.জাফর ইকবাল স্যার এর কথার মাধ্যমে নিজেদের চেতনাবোধ কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছেন। কোন ব্যক্তির জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করা তাও আবার ভুল পথে কখনোই কাম্য নয়। বিভিন্ন সংকটের সময় এ ধরনের কিছু দায়িত্বশীল মানুষ সমাজে থাকবেন,সমাজ নিয়ে ভাববেন, তাদের অনুজদের কে নিয়ে মূল্যায়ন করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা খুবই কম, একেবারে নাই না বললেও আছে বলা বড়ই দুষ্কর।

 জীবনের মূল্য আছে, তার চেয়েও বেশি মূল্যবান মৃত্যুর কারণ। কি কারনে আমি জীবনকে মৃত্যুর কোলে ঢেলে দিলাম?

তো সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে  দায়িত্ব দিয়েছেন যে, পুরো দুনিয়ার মানুষকে শুদ্ধতার দিকে  ডাকতে।ঐ দায়িত্ব পালন করবার জন্য মনের ভেতর যে শর্ত দিয়েছেন তা হল ‘ভালবাসা’।ঐ ভালবাসা আমাদের অন্তরে দিয়েছেন। যেরকম মেহনত করে দাবি দাওয়া আদায় করা শিখতে হয় একইভাবে মেহনত করে ভালবাসাও শিখতে হয়। যদি ভালবাসতে না পারি তো দায়িত্ব পালন করবে কী করে।

প্রফেসর  মুশফিক আহমেদ স্যার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি তার কোন এক বক্তব্যে বলেছিলেন, সৃষ্টিকর্তা মাকে দায়িত্ব দিয়েছেন বাচ্চার লালন পালন করার। সেই দায়িত্ব আদায় করবার জন্যে মায়ের বুকের ভেতর বাচ্চার ভালবাসা দিয়েছেন। মা তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে না যদি বাচ্চার ভালবাসা না থাকে। আমার উপলব্ধি স্যার যথার্থই বলেছিলেন। শিক্ষক তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে না যদি  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা তার অন্তরে না থাকে। তদ্রূপ শিক্ষার্থীরাও তাদের দায়িত্ব বুঝে নিতে পারবে না যদি শিক্ষকের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ না থাকে।

 “মানবাধিকার” শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। আইনগত ও নৈতিক অধিকারগুলোর মধ্যে সেগুলোই মানবাধিকার যেগুলো পৃথিবীর সকল মানুষ শুধু মানুষ হিসেবে দাবী করতে পারে। এ অধিকারগুলো চিরন্ত্রণ সার্বজনীন। এগুলো কোন দেশ-কালের সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়। পৃথিবীর সকল মানুষই এ অধিকার নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। মানুষের অধিকার কোনদিন প্রতিষ্ঠিত হবে না যদি মানুষের মধ্যে ,’ভালোবাসার’ সৃষ্টি না হয়। এ ভালোবাসা শুধু একে অপরের জন্য নয়। নিজে কেউও নিজে ভালোবাসা শিখতে হবে। আর সেটা হলো জীবনকে ভালোবাসা।

মানুষ হিসেবে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকারকে বলা হয় মানবাধিকার। মানবাধিকারগুলো মানুষের জীবনকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই মানুষের জীবনে মানবাধিকারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

‘দালাল’ ,’লবিস্ট’ শব্দটি আমাদের অত্যন্ত পরিচিত। শব্দটি সাধারণত নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়। যদিও নেতিবাচক অর্থে ব্যবহারের কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নগদ টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে কারো পক্ষে সাফাই গাওয়া বা কারো হয়ে কোনো কাজ করে দেয়া অথবা কারো স্বার্থোদ্ধারে ভূমিকা পালন করাই একজন দালালের কাজ। দালাল অনেক সময় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। দুটি পক্ষের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে দেয়। সেতুর ভূমিকা পালন করে। ঠিকমতো দালালি ধরতে পারলে আমাদের অনেক স্বার্থই অনায়াসে সিদ্ধি হয়। আবার অনেক সময় দালালের খপ্পরে পড়ে অনেক ক্ষতি ও বিড়ম্বনাও মেনে নিতে হবে।

পরের উপকার করা জগতে সবচেয়ে প্রশংসনীয় কাজ। একজন দালাল সবসময় একাজটিই করেন। দালাল কখনো নিজের দালালি করে না, সবসময়ই তিনি পরের দালাল। কোনো ব্যক্তির, দলের, প্রতিষ্ঠানের কিংবা ভিন্ন কোনো দেশের। যারই হোক না কেন, দালালি দালালিই। পরের উপকার করা। পরের প্রচার করা, পরের হয়ে কাজ করে দেয়া। কখনো কখনো তাতে কিঞ্চিৎ অর্থলাভ হয়, কখনো অর্থলাভ বেশি, কখনো অর্থলাভ ছাড়া শুধুই আনন্দলাভ হয়, কখনো বিনালাভেই দালালি করে। এমনকি কখনো কখনো নিজের অর্থ-সময়-শ্রম ব্যয় করেও মানুষ দালালি করে যায়।

অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য মানুষ মানুষের জীবনকে নিয়ে দালালি করে। বড় সূক্ষ্মভাবে চাতুরীর মাধ্যমে এটা করে থাকে, যেটা করতে গিয়ে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। ধরুন কিছু শিক্ষকের কারণে যদি আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের জীবন চলে যায় তবে সেই দালালি কি কখনই মেনে নেওয়া যায়!

খুব সম্প্রতি আমি লক্ষ্য করছি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য বিভিন্ন সময় আন্দোলন করছেন,অনশনে বসছেন, নিজেদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

আমার অনুরোধ থাকবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের জন্য আমাদের মূল্যবান জীবন যেন অযৌক্তিক মৃত্যুর পিছনে আমরা উৎসর্গ না করি। পাদ্রীর মত যেন না হয়,কেন জীবন দিচ্ছেন,’জানিনা’! এমনটা যেন না হয়।

লেখকঃ আবুল বাশার রিপন খলিফা,সহকারী অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ। 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..