বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
বাংলাদেশ সারাবেলা ডটকমে আপনাদের স্বাগতম। সারাদেশের জেলা,উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে  প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন - ০১৭৯৭-২৮১৪২৮ নাম্বারে
সংবাদ শিরোনাম ::
রবিতে ইকোন ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত  ডেঙ্গারগ্রাম ডিগ্রি কলেজে অভিভাবক ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক উপায়ে শেরপুর জেলা ছাত্র কল্যাণ সংসদ বশেমুরবিপ্রবির নয়া নেতৃত্ব নির্বাচিত রবির অর্থনীতি বিভাগে সেমিনার অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ কয়রায় খাস জমিতে ভবন নির্মাণ, ব্যবস্থা নেয়নি ইউএনও চকরিয়ায় বিএনপি নেতার উপর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলা; চমেকে প্রেরণ লামায় জায়গা-জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৭ স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে রবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন শিক্ষার্থীর আকস্মিক মৃত্যুতে নোবিপ্রবি প্রশাসনের অনুদান সাম্য ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ছাত্রদলের নতুন সাংগঠনিক টিম গঠন চকরিয়ায় বিএনপির ঘরে আওয়ামীগের গোপন সোর্স বশেমুরবিপ্রবি সেইভ ইয়ুথের নেতৃত্বে সজল-সামিরা পরীক্ষা শেষে ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী ২ বন্ধু নিহত গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি)’র চকরিয়া উপজেলা কমিটি গঠন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের ফ্রেশার্স ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত দখলের সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিক কে মারধর করলো বিএনপি নেতা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক কর্তৃক শিক্ষার্থী মারধরের অভিযোগ যবিপ্রবি ক্যাম্পাস সবুজায়নে বৃক্ষরোপণ করলো টিম “উন্নত মম শির” সাংবাদিক সংগঠনের অফিস দখলে নিয়ে ব্যক্তিগত অফিস বানালো বিএনপি নেতা হাসান রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের কর্মশালা আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে রবি উপাচার্যের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সিএসটিই ক্লাবের নেতৃত্বে সাইফ-জাবেদ গণমাধ্যম প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে লিখিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

অবশেষে বন্ধ হয়ে গেলো কুষ্টিয়া সুগার মিল

ওয়াই.এ. মিফতা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩৮২ ০০০ বার

একসময় কুষ্টিয়া সুগার মিলটি লাভের মুখ দেখলেও পরবর্তীতে প্রতি বছরই লোকসান হতে থাকে। লোকসানের কারণে মিলটি ছিলো ধ্বংসের পথে। অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল মিলটি। ৪১৫ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে অবশেষে বন্ধ ঘোষণা করা হল কুষ্টিয়া সুগার মিলস (চিনি কল)। এরই প্রতিবাদে শ্রমিকরা রাজপথে নেমেছে কয়েকবার।

প্রতি মৌসুমে কোটি কোটি টাকা লোকসানের বোঝা ও নানা সংকটে চিনিকলটি পরিণত হয় অতি রুগ্ন শিল্পে। শুধুমাত্র ২০০১-০২ থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত গত ১৯ বছরে দেশের বৃহত্তম এই চিনিকলটিতে লোকসান হয়েছে ৪১৫ কোটি টাকা।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ১৯৬১ সালে কুষ্টিয়া শহরে অদূরে জগতি নামক স্থানে ২২১.৪৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়া চিনিকল। ১৯৬৫-৬৬ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এ মিলে চিনি উৎপাদন শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৬-৬৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় চিনি উৎপাদন।
মিলের অর্থ বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি মৌসুমে চিনি উৎপাদন অব্যাহত থাকলেও এ মিলে লাভের চেয়ে লোকসানই হয় বেশি। তবে ১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছরে ২ কোটি ৬১ লাখ ও ৯৫-৯৬ অর্থ বছরে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা মিলে লাভ হয়। এছাড়া বিগত ২০০১-২০০২ থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর পর্যন্ত
গত ১৯ বছরের হিসাবমতে লোকাসন হয়েছে ৪১৫ কোটি টাকা। মিলের ব্যবস্থাপক (অর্থ) মো. খোরশেদ আলম খন্দকার গত ১৯ বছরে ক্রমাগত লোকসানের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চালুর প্রথমদিকে মিলটি লাভজনক হলেও পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, অনিয়ম-দুর্নীতি ও মাথাভারী প্রশাসনসহ নানা কারণে ক্রমাগত লোকসানের ঊর্ধ্বগতিতে মিলটি এখন অতি রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ফলে লোকসানের বিশাল বোঝা মাথায় নিয়ে কৃষিভিত্তিক একমাত্র এ প্রতিষ্ঠানটি পড়েছে চরম হুমকিতে। এ দৈন্যদশায় মিলটি ঝিমিয়ে পড়ার পাশাপাশি ৩০ কর্মকর্তাসহ ৮৯০ জন কর্মচারীর চাকরি এখন হুমকিতে। শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না ৫-৬ মাস।
কলটির প্রতিদিনের চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ১৫’শ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক মাড়াই ক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন। মিল জোনের আওতায় আখ চাষ হচ্ছে ৪০ একর জমিতে।
এছাড়া বৃহত্তর কুষ্টিয়ায় চাষি পর্যায়ে আখ চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৯শ’ ৯৩ একর জমিতে। প্রতিমন ১৪০ টাকা দরে চাষিরা মিলে চাষ সরবরাহ করেন। কিন্তু বিক্রিত আখের দাম পরিশোধে দীর্ঘ সূত্রিতাসহ হয়রানি ও নানা জটিলতায় চাষি মিলে আখ সরবরাহে আগ্রহ হারায়। প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত মিলটি আধুনিকীকরণ (বিএমআরই) করা হয়নি। ফলে বহু পুরাতন যন্ত্রাংশে সজ্জিত কারখানা প্রতি মৌসুমেই যান্ত্রিক ত্রুটিসহ ব্রেক ডাউনে চিনি উৎপাদন ব্যাহত হয়।
এছাড়াও প্রতি মৌসুমে মিলে উৎপাদিত হাজার হাজার টন চিনি থাকে অবিক্রীত। আমদানিকৃত চিনির বাজার মূল্য কম হওয়ায় ডিলার ও ভোক্তারা দেশি চিনির পরিবর্তে কেমিক্যাল মিশ্রিত রিফাইন চিনির দিকেই বেশী ঝুঁকছেন। ফলে নানা সংকটে সম্ভাবনাময় এ মিলটি ঘুর দাঁড়াতে পারেনি।
১৯৬১ সালে স্থাপিত এই মিলটি নিয়মিত চিনি, চিটাগুড়, মন্ড ও জৈবসার উৎপাদন করে আসছিলো। প্রথম কয়েক বছর মিলটি লাভে থাকলেও একসময় মুখথুবড়ে পরে। ধারাবাহিক ভাবে লোকসানে চলে যায় মিলটি।
পাটকলের ধারাবাহিকতায় এবার লোকসানে থানা চিনিকল বন্ধ করতে সরকার একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করে। কমিটির দীর্ঘ যাচাই বাছাই শেষে কুষ্টিয়া সুগার মিল সহ মোট ৬ টি সুগার মিলকে সাময়িক বন্ধের ঘোষনা দেন। আগামী বছর আরো দুইটি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে অধিকতর পর্যবেক্ষণ করে কমিটি কোন মিন কে আবার চালুও করতে পারে বলে জানাগেছে।
ষাটের দশকে প্রতিষ্ঠত চিনি শিল্প করপোরেশন যাত্রা শুরু হয়। দেশে শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থানের লক্ষে মিলগুলো প্রতিষ্ঠিত হলেও সময়ের পরিবর্তনে আজ রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে পড়েছে চিনি শিল্প। সরকারের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে ১৫ টি চিনি কলের মধ্যে মাত্র একটি লাভের পথে, দুইটি কলের সক্ষমতা ৫০% এর উপরে আর বাকি গুলো পথ হারিয়ে মুখথুবরে পড়ে লাইফ সাপোর্টে আছে। সার্বিক উৎপাদন ক্ষমতা ও ব্যায় বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক দুর্নীতি সহ নানা কারনে মিলগুলোর লোকসান হয় প্রতিবছর। ধারাবাহিক লোকসানে সরকার ভর্তুকি দিতে দিতে হাপিয়ে উঠেছে। এ কারনে মিলগুলো নিয়ে সরকার নড়েচড়ে বসেছে। সরকার মিলগুলোর হিসাব নিকাশ করতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করে। ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুমে এই কমিটির সুপারিস করে নয়(৯) টি মিল মাড়ায়ে থাকবে বাকী ছয়(৬) টি মিলে মাড়াই বন্ধ থাকবে। বন্ধ ৬ টির মধ্যে আছে কুষ্টিয়া সুগার মিল। তবে কমিটি সূত্রে জানা যায়, বন্ধ হয়ে যাওয়া মিল গুলোর কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চালু ৯ টি মিলে বদলি করা হবে আর কিছু নিজস্ব মিলেই থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..