মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ যা সংক্ষেপে এমটিএফই।এটি একটি অনলাইন ট্রেডিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। দুবাইভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম মডেলে ব্যবসা করত। ভারত ও বাংলাদেশ থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিনিয়োগকারী ছিলেন।
আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিচালিত অনলাইন অ্যাপ এমটিএফই বন্ধ হয়ে গেছে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে দুমকীর অনেক তরুন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এখন ওই অ্যাপ থেকে তাঁরা কোনো টাকা ওঠাতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী একাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমটিএফই অ্যাপটি চালু থাকা অবস্থায় অ্যাকাউন্ট চালু করার জন্য সর্বনিম্ন ২৬ ডলারের সমপরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হতো। সেই টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন লভ্যাংশের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। আর এসব প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রচার করছিলেন কিছু যুবক। আর এতেই হুমড়ি খেয়ে অ্যাপটিতে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।দুমকীর এমটিএফইর স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করতেন অন্তু নামের এক যুবক। তিনি এমটিএফইর সিও হিসেবে পরিচিত। এই প্রতিনিধিরা কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলে দিলে কোম্পানি থেকে তাঁরা কমিশনও পেতেন।
এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার পর বিনোয়াগ করা টাকার ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হতো। গত সোমবার থেকে অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীরা আর টাকা ওঠাতে পারেননি। যাঁরা দ্রুত আয় করার স্বপ্ন নিয়ে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা এখন প্রতারণার শিকার।
দুমকী উপজেলার বাসিন্দা আবুল কালাম নামের এক যুবক বলেন, ‘আমার বন্ধু আকলাখুর রহমান অন্তুর কাছে এই অ্যাপের কথা শুনে এক লক্ষ টাকার উপরে বিনিয়োগ করেছিলাম। কিছুদিন ওই অ্যাপ থেকে ওই টাকার ওপর লাভও পাইছি। কিন্তু হঠাৎ করে কিছুদিন আগে থেকে অ্যাপটি থেকে আর টাকা ওঠানো যাচ্ছে না। উল্টো বিনিয়োগ করা টাকা কমতে কমতে ব্যালান্স মাইনাস হয়ে গেছে। প্রতারক চক্র টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
এছারাও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যুবক বলেন এই অ্যাপ সম্বন্ধে আমাদের কোন ধারণা ছিল না, আমাদের বন্ধু এবিএম আকলাখুর রহমান অন্তু এই অ্যাপ খোলায়, তাছাড়া তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সিও, তায় তার উপর ভরসা করে আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা এই অ্যাপে বিনিয়োগ করি,কিন্তু আজ আমরা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায়। তবে তাদের কাছে এ বিষয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা যারা বন্ধু মহল ভুক্তভোগী আছি সবাই মিলে ডিসিশন নিয়ে অবশ্যই আইনের পদক্ষেপ নিব, তবে সিও অন্ত যদি টাকা ফেরত দেয় তাহলে আমরা এসব কোন ঝামেলায় যাব না।
এমটিএফই অ্যাপের সিও হিসেবে পরিচিত দুমকী উপজেলার এবিএম আকলাখুর রহমান অন্তু বলেন,
আমার ইউনিভার্সিটির এক বড় ভাই আমাকে লিংক দিয়ে ছিলেন ও সেখানে কাজ করার জন্য বলেন।তাছাড়া আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী, আমার ১৭ লক্ষ টাকা এখানে বিনিয়োগ করেছি,আজ আমি নিঃস্ব,,শুধু পকেট খরচ ছাড়া আমার কাছে কোন টাকা পয়সা নেই। তবে প্রথমদিকে লাভজনক ছিল বিধায় আমার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে উদ্বুদ্ধ করি।কিন্তু কাউকে কোনো প্রলোভন দেখাইনি। সবার কাছে বলে রেখেছি এটা অনলাইন ভিত্তিক খুব রিস্কি নিজের দায়িত্বে খুলতে হবে। কারো কাছে কোন চুক্তিবদ্ধও ছিলাম না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুমকী থানার ওসি তদন্ত বলেন , ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি কিংবা থানায় কোনো মামলাও করেননি। কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু আপনার মাধ্যমেই এ রকম ঘটনা প্রথম শুনলাম। আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখব।
Leave a Reply