সারাদেশে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্ট কান্ডের পর রিসোর্ট কৌতূহল নতুন করে জেগেছে জনমনে।
পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে রয়েছে একাধিক রিসোর্ট। যাদের মালিকানায় রয়েছেন স্থানীয় একাধিক শিল্পপতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমাণ সহ মাদক ও অশ্লীলতার ছবি ঘুরে বেড়ালেও ঈশ্বরদীর পুলিশ-প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নীরব।তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে জনমনে, কী মধু ঈশ্বরদীর রিসোর্টে?
মাদক আর নগ্নতায় ভরপুর পাবনা জেলা ঈশ্বরদীর এই রিসোর্টগুলো। সম্প্রতি রিসোর্ট নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হলে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়।
বিভিন্ন সূত্র ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, এ রিসোর্টগুলোতে প্রতিনিয়ত মদ, নারী ও মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের অসামাজিক কার্যকলাপ ও উচ্চ শব্দের ডিজে পার্টির কারণে এলাকার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী নাগরিক, শিক্ষার্থী ও উচ্চ বিত্তের তরুণ-তরুণীরা রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের খপ্পরে পরে বিপুল অঙ্কের টাকা খোয়ানোর ঘটনা এখন নিত্যদিনের।
ঈশ্বরদী’র এমনই দু’টি রিসোর্ট উপজেলার জয়নগরে অবস্থিত স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট ও পাকশীতে অবস্থিত পাকশী রিসোর্ট।
এদের একটি রিসোর্টের মালিক শীর্ষ বিএনপি নেতা।অন্যটির মালিকের বিরুদ্ধেও রয়েছে পাবনা জেলা জামায়াতের আমিরের স্নেহধন্য হওয়ার গুঞ্জন।
এদিকে রিসোর্টগুলোতে মদ বিক্রয়ের সরকারী বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন নেই। তারপরও দেশী-বিদেশী মদ বিক্রির খবর ও ছবি এখন ঈশ্বরদীর ওপেন সিক্রেট।
তখন থানায় রিসোর্টের রন্ধনকারী ও খায়রুল ইসলামের পিএসসহ চালককে আটক করে বসিয়ে রাখা হয়। আটককৃত মাদক দ্রব্যগুলো রাশিয়ানদের উল্লেখ করে থানায় রাশিয়ানদের পাসপোর্টের কপি ইমেল করে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে প্রশাসনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সুপারিশে বেশ কিছু টাকার বিনিময়ে মাদক দ্রব্যসহ সকলকে ছাড়িয়ে আনা সম্ভব হয়।
জনশ্রুতি রয়েছে, পার্শ্ববর্তী নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোর, ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কম বয়সী মেয়েদের (কল গার্লদের) রিসোর্টগুলোতে এনে অসামাজিক ব্যবসা করানো হয়।
তবে একটি রিসোর্টে গিয়ে কিশোর – কিশোরীদের অসামাজিক কর্মকান্ডের চিত্র প্রকাশ্যেই দেখা যায়।
তবে জনবসতি এলাকায় রিসোর্ট হওয়ায় এলাকাবাসীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। সারারাত রিসোর্টে মদ পান আর উচ্চ শব্দের ডিজে পাটির নামে অর্ধ উলঙ্গ নৃত্য, হৈইহুল্লোড়। আর বিশেষ বিশেষ দিবসে উচ্চ শব্দের বাজি ফোটানোও মারাত্মক ঝুকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কাছে। এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ এভাবে উচ্চ শব্দে ডিজে পার্টি না করার জন্য রিসোর্টে এসে অভিযোগ করেন।
কিন্তু রিসোর্ট মালিক অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় সে সব অভিযোগ কর্নপাত করছেন না। আর এখানে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনসহ প্রভাবশালীনেতাদের চলাফেরা থাকায় এলাকাবাসী বর্তমানে অভিযোগ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও সুত্রগুলো দাবী করেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন “এগুলো মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের বিবেচনাধীন। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলেই আমরা অভিযান চালাবো।”
অভিযুক্ত রিসোর্টগুলোতে আপনাকেও দেখা যায় প্রশ্ন তুললে এ প্রতিবেদককে ওসি জিজ্ঞাসা করেন “রিসোর্ট অবৈধ না বৈধ?”
প্রতিবেদক “বাড়ি তৈরিও বৈধ। কিন্তু সে বাড়িতে অবৈধ কাজ হলে তা কি বৈধ থাকে?” বলে পাল্টা প্রশ্ন করলে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এখন এলার্ট বলে জানান ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ!
Leave a Reply