কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারমুখ থেকে ব্রজেন্দ্র মহাজনের ঘাঁটা এলাকা পর্যন্ত সড়ক প্রায় ২ কিলোমিটার। এরপরের অংশ ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড ওয়ার্ড হয়ে অলিশাহ বাজার পর্যন্ত ১ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে ভাঙ্গারমুখ থেকে অলিশাহ বাজার পর্যন্ত সড়কটি প্রায় ৩ কিলোমিটার। চকরিয়া পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ড ও ফাঁসিয়াখালী ২নং ওয়ার্ডবাসীর চলাচলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। তবুও ৩ কিলোমিটার সড়কের পাশে নেই রাত্রিকালীন সড়ক বাতি।
এই সড়কপথে প্রতিদিন ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে থাকে। দিনের আলো ফুরিয়ে যাবার সাথে সাথে সন্ধ্যা নেমে এলেই গুটগুটে অন্ধকার।
এই সুযোগেই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম করে থাকে অপরাধীরা। এসব কারণে সড়কে রাতের বেলায় সাধারণ মানুষজন স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না। রাতে এই সড়কে গাড়ি চালক ও যাত্রীদের মনে ভয়ভীতি কাজ করে।
জানা গেছে, এই সড়ক জুড়েই সন্ধ্যার পর থেকে গুটগুটে অন্ধকারে গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি হয়। কারণ, ৩কিলোমিটারের এ সড়কে নেই কোনো সড়ক বাতি। বিশেষ করে ভাঙ্গারমুখ বাজার থেকে ব্রজেন্দ্র মহাজনের ঘাঁটা ইজিবাইক স্ট্যান্ড পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক রাতে হয়ে ওঠে অতি ভয়ংকর। দিনের আলো ফুরিয়ে যাবার সাথে সাথে সন্ধ্যা নেমে এলেই অন্ধকারে ওই সড়কে এলাকার মানুষজন স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারে না।
রাত হলেই সাধারণ মানুষজনসহ যাত্রীরা যাওয়া আসার সময় মাঝে মধ্যেই ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিচ্ছন্ন ঘটনার কবলে পড়েন। প্রায় সময় সড়কের মাঝপথে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা হয়ে থাকে। তাই রাতের বেলা ভয়ে যাত্রী ও গাড়ি চালকরা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে চায় না। এলাকার মানুষজন স্বাভাবিক চলাফেরা করতে ভয় পায়। রাত হলেই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কা কাজ করে। বিগত ছয় মাসে এই এলাকায় কমপক্ষে ১০টি চুরি, ডাকাতিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙ্গারমুখ থেকে ব্রজেন্দ্র মহাজনের ঘাঁটা এলাকা পর্যন্ত সড়কের আশপাশের ফাঁকা জায়গাগুলো রাতের বেলা চলাফেরা করতে অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ সড়ক বাতি না থাকায় এসব জায়গায় অন্ধকারে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে। বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, দোকানেও রাতের বেলায় ডাকাতি ও চুরি ঘটনা ঘটে থাকে। সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে ব্রজেন্দ্র মহাজনের ঘাটা এলাকার চা দোকান ব্যবসায়ী সুমনের দোকান থেকেও চোরের দল বেশকিছু মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
তারা আরও জানান, গত কয়েকমাস আগে ফাঁসিয়াখালী ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্রাক ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম ঢাকা থেকে অফিসিয়াল কাজ শেষ করে চকরিয়ার চিরিংগা পৌরশহরে নেমে রাত আনুমানিক ২টার দিকে অটোরিকশা যোগে তার নিজ বাড়িতে ফেরার পথিমধ্যে পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ডের মৌলভীপাড়া রাস্তার মাথা এলাকায় পৌঁছালে সিএনজি নিয়ে এসে একদল ছিনতাইকারী তার কাছে রক্ষিত নগদ টাকা, ব্যাংকের এটিএম কার্ড, মোবাইলসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে অটোরিকশা চালক ও ব্যাংক ম্যানেজার শহিদুল ইসলামের চিৎকার শুনে পাশ্ববর্তী বাড়ির সাংবাদিক মোঃ কামাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে এবং জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তারা।
এছাড়াও সড়কে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে ইতিমধ্যে রাত্রিকালীন সড়ক বাতির জন্য আবেদন জানিয়ে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বরাবর স্মারক লিপিও প্রদান করেছেন সেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশন। এরপরও কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি চকরিয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে জানতে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী’র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply