ভালোবাসার দ্বিপ্রহর
ক্যাম্পাস থেকে ফিরেই নিজের রুমে দরজা লক করে দেয় তুলি। ভীষণ কান্না করতে করতে থাকে মেয়েটা।
আজকে শুভ্র কে ফার্মেসী ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়ের সাথে দাঁত কেলিয়ে ঘুরতে দেখেছে ক্যাম্পাসে। ও যে শুভ্র কে এতো ভালোবাসে ছেলেটা কি বুঝে না? আর বুঝবেই বা কি করে তুলি তো বলেই নি।
আজকে ৩দিন হলো ক্যাম্পাসে আসে না তুলি। কার থেকে একটু খোঁজ নিবে বুঝতে পারে না শুভ্র। মেয়েটার কিছু হয়েছে কি,না ভাবতে গিয়েই টেনশনে পরে যায় শুভ্র। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতে গেলেও তো বুঝে ফেলবে! আর এই কথাটা আবার যদি পাঁচ কান হয়ে তুলির কানে যায়? তুলি কে কি উত্তর দিবে ও? মেয়েটা যা রাগী স্বভাবের। ভয়ে কোনদিন কথায় বলতে পারে নি শুভ্র, আর সেই তুলিই যদি নিজে থেকে এসে এসব জিগেস করে বসে তখন?
টিএসসিসি’র সামনে আসতেই তুলির সামনে পরে যায় শুভ্র। কিছু’টা এগোতেই পিছন থেকে নিজের নামটা শুনে থমকে দাঁড়ায় সে, ফিরে তাকাতেই দেখে তুলি ডাকছে। কিছুটা ভয় নিয়ে সামনে এগোতেই জিজ্ঞেস করে তুলি, ” আমার খোঁজ করেছিলেন কেন?” বুঝতে বাকি রইলো না এইটা মিহিনের কাজ, সব বলে দিছে ও (মিহিন তুলির ক্লাসমেট, আর শুভ্রের সাথে একই মেসে থাকে)। মুক্ত মঞ্চের ফাঁকা জায়গাটা’তে রোজই আড্ডা দিতে দেখি আপনাকে, হঠাৎ কিছুদিন দেখতে পায়নি তাই! আমতা-আমতা করে জবাব দেয় শুভ্র।
এভাবে আস্তে আস্তে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায় দুজনের। আর এই বন্ধুত্বের সম্পর্কও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, ভালোবাসায় রুপ নেয় দুজনের সম্পর্ক। ক্যাম্পাসে সারাদিন একসাথে ঘুরাঘুরি, মজা করা আর খুনসুটি’তে ভালোই চলতে থাকে ওদের সম্পর্ক।
আর এভাবেই ১টি বছর পেরিয়ে যায়, মাস্টার্স কমপ্লিট করে চাকরির খোঁজে ক্যাম্পাস ছাড়ে শুভ্র।
আজকে তুলির বিয়ে, সকাল থেকেই কান্নাকাটি করছে মেয়েটা। বাবা মাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে ভেবেই বেশি খারাপ লাগছে ওর। অন্যদিকে, ভালো লাগাও কাজ করছে। যাকে এতো ভালোবেসেছে, সেই শুভ্রের সাথেই আজকে তুলির বিয়ে।
ডায়েরি টা বন্ধ করে তাসফি (শুভ্র আর তুলির একমাত্র মেয়ে তাসফি)। ভাবতেই অবাক লাগে তাসফির, মায়ের মতো করে ওর বিয়েটাও হতে যাচ্ছে ওর ভালোবাসার মানুষ’টার সাথে। আনন্দে দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পরে তাসফির।
এভাবেই ভালো থাকুক ভালোবাসাগুলো, যত্নে আর ভালোবাসায়।
লেখকঃ রাকিবুল ইসলাম,
আইন বিভাগ (২য় বর্ষ),রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
Leave a Reply