বাঙালির মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২০ সালের এই দিনে তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার নিভৃত পল্লী টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন জাতির এই সূর্যসন্তান।
পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে মুক্তির দূত প্রভাকর রূপে জন্ম নেওয়া ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি শিক্ষা-দীক্ষা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী, মহত্তম জীবনবোধ সততা, সাহস, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ নামক পরাধীন-সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। এই দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুজিব বর্ষ পালন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও নানাবিধ কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস।
সকালে শিশুদের জন্য অনলাইনে আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় শোভাযাত্রা সহকারে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরে শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, আইকিউএসি, অগ্নীবিণা ও দোলনচাপা হল কর্তৃপক্ষ, ডীন, কলা অনুষদ, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলসহ অন্যান্যরা।
প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধুর ১০১ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে কেককাটা, বেলুন ওড়ানো, পায়রা অবমুক্তকরণ করা হয়।
এরপরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমাদের জাতির পিতা থাকবেন। তিনি আমাদের মহানায়ক। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। আজ মুক্ত স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি।’
বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত দূরদর্শী নেতা ছিলেন মন্তব্য করে ড. মোস্তাফিজ বলেন, জাতীয় কবি নজরুলকে তিনিই স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন। জাতীয় কবি এই ময়মনসিংহে এসেছিলেন বলেই এখানে সেই মহান কবির নামে মহান প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতির পিতা মহান কবি নজরুলকে না আনলে হয়তো এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাই হতো না। জাতির পিতার কাছে আমরা চিরঋণী।
এসময় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. জালাল উদ্দিন, কলা অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর শাহাবউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল আহ্সান লিমন, কর্মচারী সমিতির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রাজু, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রেজাউল করিম রানা, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুসহ অন্যান্যরা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কলা অনুষদের ডিন ও উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী।
কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. সুব্রত কুমার দে, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ চৌধুরী, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. মোঃ তারিকুল ইসলাম, পরিচালক (পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিস) প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক,কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যরা।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় হবে ফানুস ওড়ানো উৎসব। এরপরে সন্ধ্যা সাতটায় ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ: সুবর্ণ শৈশবের দিগন্ত’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর শামসুজ্জামান খান, বিশেষ অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. জালাল উদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দিবেন কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন ওয়েবিনার কমিটি-২০২১ এর সভাপতি প্রফেসর ড. আহমেদুল কবীর। সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। ওয়েবিনার শেষে অনলাইন সঙ্গীতানুষ্ঠান: বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত গান পরিবেশন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ।
Leave a Reply