করোনা মহামারীতে দীর্ঘদিন শিক্ষাব্যবস্থা বন্ধ থাকার পর ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পাবিপ্রবিতেও পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের এই মহামারী কোভিড-১৯ বিবেচনা করে শিক্ষার্থী বান্ধব পরীক্ষা পদ্ধতি ও কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ ৭দফা দাবি রেখে মাননীয় উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থগিত পরীক্ষা সমূহ গত ১৫ জুন থেকে স্ব শরীরে শুরু হয়েছে এবং আটকে থাকা অন্যান্য বর্ষের বিভিন্ন পরীক্ষা আগামী ২৬ জুন থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে দেশে কোভিড-১৯ অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে, পাবনার আশেপাশের জেলা সহ বিভিন্ন স্থান লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমতাবস্থায় সেসব এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীরা পাবনায় অবস্থান করছে এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে শিক্ষার্থীরা করোনা ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ও করোনা ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ৭ দফা দাবির আবেদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর।
পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের প্রেরিত আবেদনপত্রে জানানো হয়, “পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ শিক্ষার্থীদের সেশন জটের কথা বিবেচনা করে কোভিভ-১৯-এর মধ্যে পরীক্ষা চলমান রয়েছে। ক্যাম্পাসে স্বশরীরেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে কিন্তু সম্প্রতি করোনা প্রভাব ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরাও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছে। উল্লেখ্য পাবনা জেলার পাবনা সদর হাসপাতালে প্রায় ২০০ জনের মত কোভিড-১৯ এ অবস্থায় ভর্তিরত আছে। পাবনার আশেপাশের জেলাগুলো নাটোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক লকডাউন দিয়েছেন, যার জন্য ঐসব জেলার শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে এসে স্বশরীরে পরীক্ষা দিতে আসতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও শিক্ষার্থীদের সেশন জটের কথা বিবেচনা করে চলমান পরীক্ষাগুলো (রুটিন অপরিবর্তিত রেখে) অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহন করা সমীচীন।”
শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আবেদনের ৭দফা দাবীগুলো হল:
১। অনলাইন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহন করা।
২। অনলাইন পদ্ধতিতে সেমিস্টার ফি প্রদানের ব্যবস্থা করা।
৩। আবাসিক ও অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনা।
৪। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও উপসর্গ যাদের আছে তাদের চিকিৎসা বায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বহন করা
৫। কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ বুথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্থাপন সহ আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা।
৬। স্বশরীরে চলমান পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীদের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তাপমাত্রা পরিমাপ করে পরীক্ষা হলে প্রবেশ নিশ্চিত করা।
৭। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে হল ক্লিয়ারেন্স শিথিল করা।
আবেদনের দাবির প্রেক্ষিতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম রোস্তম আলী বলেছেন,
১. অনলাইন পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য আগেই স্যারদের কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, চাইলেই কোন বিভাগের চেয়ারম্যান স্যার অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবেন।
২. অনলাইন পদ্ধতিতে সেমিস্টার ফি জমা দেওয়ার সিস্টেম আগামী বাজেটেই করে দিবেন।
৩.আবাসিক ও অনাবাসিক সবার জন্য করোনা ভ্যাক্সিন প্রাপ্তির জন্য আজকেই পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি মহোদয় এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কথা বলেছে দ্রুত সময়ে সবার জন্য ভ্যাক্সিন প্রাপ্তির জন্য।
৪. যাদের করোনার উপসর্গ আছে বা আক্রান্ত শিক্ষার্থীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও মেডিসিন খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবেন।
৫. পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে করোনায় কেউ আক্রান্ত হলে তার জন্য বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সুস্থ হওয়ার দ্রুত সময়েই নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে পারবে।
৬.স্বশরীরে পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রাথমিক সুরক্ষা যেমন মাস্ক,হ্যান্ড সেন্টিটাইজার ডিপার্টমেন্ট এর বহন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সর্বোপরি উপাচার্য এম রোস্তম আলী জানান, পাবনা জেলা লক ডাউন ঘোষণা না হলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলমান থাকবে। আর লকডাউন ঘোষণা আসলে স্বশরীরে পরীক্ষা বন্ধ থাকবে, বিভাগগুলো চাইলে অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর আবেদন জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ রাসেল, সাইদুজ্জান সৌরভ, সাংগঠনিক সম্পাদক মফিদুল ইসলাম, নাইমুর নাহিদ ইমন সহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অন্য নেতৃবৃন্দ।
পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যেকোন সংকটে পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
Leave a Reply