আজ ৩ মার্চ রবিবার শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্যভাবে উদ্বোধন হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে দুদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শাহ্ আজমের সভাপতিত্বে সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় কনফারেন্সের প্রথম অধিবেশন। কনফারেন্স বক্তা হিসাবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খ্যাতিমান সংগীতজ্ঞ জনাব শেখ সাদী খান। দুপুর বারোটা পয়তাল্লিশ মিনিটে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরিবেশনা করেন মনোমুগ্ধকর ধ্রুপদী সংগীত। এরপর বিকাল সাড়ে তিনটায় ‘বাংলা গানের পূর্বাপর: প্রসঙ্গ শাস্ত্রীয় সংগীত’ ও ‘উচ্চাঙ্গ সংগীত থেকে আধুনিক বাংলা গান: একজন সংগীতজ্ঞের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্সে প্রাবন্ধিক হিসেবে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসিত রায় ও বিশিষ্ট সুরকার শেখ সাদী খান। সন্ধ্যায় দেশ-বিদেশের সংগীত বিশেষজ্ঞদের শাস্ত্রীয় সংগীতের পরিবেশনায় ছিল ধ্রুপদ, খেয়াল, তবলা লহড়া, বীণা বাদন এবং উচ্চাঙ্গ সংগীত। প্রখ্যাত বীণাশিল্পী পণ্ডিত বিশখ শীলের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় কনফারেন্সের প্রথম দিনের কর্মসূচি।
কনফারেন্স সভাপতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম বলেন, মহান স্বাধীনতার মাসে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাঙালি জাতির পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তাঁর নেতৃত্বে আমরা যেমন স্বাধীন ভুখণ্ড পেয়েছি তেমনি সাংস্কৃতিক পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আজ যে আন্তর্জাতিক ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক সম্মেলনের আয়োজন করেছি তার পশ্চাতে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতা। জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা-গবেষণা ও সংস্কৃতিকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।
রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজম বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মকে জাতির মানসে চির অম্লান রাখার মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো দুইদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছে।
তিনি আরও বলেন বর্তমানে আধুনিক বাংলা সংগীতের যে দুর্যোগ চলছে তা কাটিয়ে সংগীতের ঘোর অমানিশা দুর করতে প্রয়োজন ধ্রুপদী সংগীতের পুনর্জাগরণ। নতুন প্রজন্ম শাস্ত্রীয় সংগীতের চর্চায় নিবেদিত হলে দেশাত্ববোধের উন্মেষ ঘটবে এবং মানবিক বোধ জাগ্রত হবে যা শান্তি সম্প্রীতি ও সৌহার্দের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। এতে কেবল জাতীয় উন্নয়নই নয় বাংলা সংগীতের ধারাও সুসংহত হবে। সেই অর্থে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজন তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে সকাল দশটায় কর্মসূচি শুরু হবে কন্ঠসংগীত ও তবলা বাদন কর্মশালার মধ্যদিয়ে। কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসাবে থাকবেন পণ্ডিত শ্যামসুন্দর গোস্বামী (কলকাতা, ভারত) ও শুভ্রাংশু চক্রবর্তী (কলকাতা, ভারত)। বিকাল পাঁচটায় কনফারেন্সের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমদ এবং সভাপতিত্ব করবেন কনফারেন্স আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মো: তানভীর আহমেদ। এরপর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশনা ও বিদেশী অভ্যাগত অতিথিদের পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শেষ হবে দুইদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক কনফারেন্স।
Leave a Reply