শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ ::
বাংলাদেশ সারাবেলা ডটকমে আপনাদের স্বাগতম। সারাদেশের জেলা,উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে  প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন - ০১৭৯৭-২৮১৪২৮ নাম্বারে
সংবাদ শিরোনাম ::
জবি ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে ‘ডিবেট প্রিমিয়ার লীগ’ প্রতিযোগিতা ভেড়ামারায় রহিমা আফছার যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া সংস্থার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন পাবনায় “আমরা বহুজন” স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ  চকরিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক অভিযান অপহরণ চেষ্টা মামলায় অবশেষে চকরিয়া থানা পুলিশের জালে কিশোরগ্যাং লিডার আরফাত ভেড়ামারা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩৩তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ পদ্মা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নেতৃত্বে রহিম ও বাধন কক্সবাজারের পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী ভেড়ামারা সরকারি কলেজে ৩৩তম বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা’র পুরস্কার বিতরণ ও নবীন বরণ পর্যটককে ছুরিকাঘাত, কক্সবাজারে ৫ ছিনতাইকারী আটক চকরিয়ার বরইতলীতে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য আল্ হেরা মডেল একাডেমির প্রাথমিক (সরকারি) বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও দোয়া অনুষ্ঠান একদন্ত শেখ রাসেল স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৩ এর চ্যাম্পিয়ন ২ নং ওয়ার্ড ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত দুমকিতে রাস্তার উদ্বোধন চকরিয়ায় বাস ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ চকরিয়ার হারবাংয়ে সড়কের পাশের সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ পাবিপ্রবিতে বন্ধুসভার আয়োজনে বিতর্ক কর্মশালা লামায় গলায় ফাঁস দিয়ে নারী উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের আত্মহত্যা কয়রা উপজেলা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি অমিয় মন্ডল সাঃ সম্পাদক উর্মি পটুয়াখালীর দুমকিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীর দুমকিতে চাইনিজ রেস্তোরাঁ পুড়ে ছাই- ১০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষয়ক্ষতি চকরিয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বনবিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের যৌথ অভিযান চকরিয়ায় পানিতে ডুবে ২ কন্যা শিশুর মৃত্যু

১৫ই আগস্ট! বাঙালি জাতির ললাটে কালো টিকা একে দেওয়ার দিন

তুষার মাহমুদ
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০
  • ৬০৮ ০০০ বার

১৫ই আগস্ট! বাঙালি জাতির ললাটে কালো টিকা একে দেওয়ার দিন।

 

মধুমতি নদীর অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে একটি হচ্ছে বাইগার।বাইগার নদীর তীর ঘেঁষে ছবির মত সাজানো সুন্দর একটি গ্রাম। নদীর দুপাশে অসংখ্য গাছ ও সবুজ সমারোহ। ভাটিয়ালি গানের সুর ভেসে আসে হালধরা মাঝির কন্ঠ থেকে।পাখির গান,নদীর কলকল ধ্বনি এক অবিশ্বাস্য মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলে।বলছি এদেশের রাজনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কথা। যেখানে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, এদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি, পিতা শেখ লুৎফুর রহমান ও মাতা সায়রা খাতুনের প্রথম পুত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা।যিনি ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ এদেশের মানুষের মুক্তির দূত হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।জন্মের পর নানা শেখ আবদুল মজিদ তাঁর নাম রাখেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং তিনি(শেখ আবদুল মজিদ) তাঁর কন্যা তথা বঙ্গবন্ধুর মাতা সায়রা খাতুনকে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দান করে বলেছিলেন তোর ছেলের নাম এমন রেখেছি যে নাম একদিন জগৎ বিখ্যাত হবে।বঙ্গবন্ধুর শৈশব কেটেছিল টুঙ্গিপাড়ার নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে,মেঠোপথে ধুলোবালি মেখে,মাছরাঙা কীভাবে ডুব দিয়ে মাছ ধরে,দোয়েল পাখির সুমধুর সুর বঙ্গবন্ধুকে আকৃষ্ট করত।

গোপালগঞ্জ মিশনারী স্কুলে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন এবং সেখানেই তাঁর কৈশোর বেলা কাটে।পিতা-মাতা আদর করে ডাকত খোকা নামে এবং গ্রামবাসী “মিয়া ভাই” নামে সম্বোধন করত।লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও তিনি বেশ আকৃষ্ট ছিলেন।বিশেষ করে তিনি খুব ফুটবল অনুরাগী ছিলেন।ছোটকাল থেকেই তিনি অত্যন্ত হৃদয়বান ছিলেন।তখনকার দিনে ছেলেদের পড়াশোনার তেমন সুযোগ না থাকায় অনেকে জায়গির থেকে পড়াশোনা করত।চার-পাঁচ মাইল পথ হেটে স্কুলে আসতে হতো।সকালে খেয়ে আসলে সারাদিন অভুক্ত অবস্থায় থাকত।আর বঙ্গবন্ধুর বাড়ি কাছে ছিল বলে তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে এসে খাবার খাওয়াতেন।ছাতার অভাবে বৃষ্টিতে ভিজে কেউ স্কুলে আসলে তাকে তাঁর নিজের ছাতা দিয়ে দিতেন।ছোটবেলা থেকেই তিনি খুব অধিকার সচেতন ছিলেন।বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান,চাল,ডাল যোগাড় করে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের তিনি সহায়তা করতেন।
গোপালগঞ্জ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়তে যান।তখন তিনি বেকার,হোষ্টেলে থাকতেন।এই সময় তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে এসে হলওয়ে মনুমেন্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন সক্রিয়ভাবে।আর তখন থেকে রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু।
১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাশ করেন।পাকিস্তান-ভারত ভাগ হবার সময় দাঙ্গা হয়।তখন দাঙ্গা দমনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। অন্যায়কে তিনি কোন দিন প্রশ্রয় দেন নি।ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিতে তিনি কখনো পিছপা হননি।পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।নানা আন্দোলনের জন্য জীবনের অধিকটা সময় তিনি জেলে ব্যয় করে দিয়েছেন এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্টার জন্য।জীবনের আনন্দ,সুখ,আহ্লাদ থেকে হয়েছেন বঞ্চিত। দেশের মানুষের ভালবাসা তাকে সাহস দিয়েছে,অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সর্বপ্রথম যখন আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি আঘাত হানে অর্থাৎ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষার ঘোষণা দিলে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিটি বাঙালি প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।ছাত্র সমাজ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।এই আন্দোলনে ১৯৪৯ সালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হোন।টানা ১৯৫২ সাল অবধি তিনি জেলে বন্দি থাকেন।তারপর থেকে দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ঘাতকের নির্মম নির্যাতন ও বুলেটের সামনে পথহারা বাঙালিকে যিনি পথ দেখিয়েছেন সাহস দিয়েছেন এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য যিনি অসহযোগ আনদোলনের ডাক দিয়েছিলেন,সারা বিশ্বে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন পতাকাবাহী রাষ্ট্র এনে দিয়েছেন তিনি হচ্ছেন হচ্ছেন পিতা মাতার আদরের খোকা,টুঙ্গিপাড়ার সকলের “মিয়া ভাই” খ্যাত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে ব্রহ হয়ে যিনি নিঃস্বার্থভাবে এদেশের মানুষের ভাগ্যের চাকাকে ঘুরিয়ে দিতে এবং তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তিনি কাজ করে চলেছিলেন।কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যিনি সোনার বাংলা বিনির্মানের স্বপ্ন দেখেন সেই স্বপ্নসারথিকে দেশিয় কিছু নরপশু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট হত্যা করে এদেশের ইতিহাসে একটি ভয়াল কালো অধ্যায়ের সূচনা করে।এই দিনে বাঙালি জাতির ললাটে সারাজীবনের জন্য এক কালো টিকা লাগিয়ে দেয় নরপশুগুলো।নরঘাতকের বুলেটের আঘাত সেদিন স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতিকে তাঁর বিশ্বস্ত সহচর মোস্তাক ও তার বাহিনী বুক ক্ষত বিক্ষত করে দেয়।এ যেন গোটা বাংলাদেশকেই হত্যা করার শামিল। সেদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করা হয়নি হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের ও তাঁর নিভৃত সাম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাজ্ঞী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে,হত্যা করা হয়েছিল শেখ কামাল,শেখ জামাল ও ছোট্ট রাসেলও রেহাই পায়নি।রেহাই পায়নি কামাল-জামালের নব পরণীতা বধূ সুলতানা ও রোজী।যাদের হাতের মেহেদীর রং বুকের রক্তে মিশে একাকার হয়ে গেছে।খুনিরা এখানেই শেষ করেনি বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ নাসের,তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধুর ভাগিনা শেখ মনি ও তার স্ত্রী আরজুকেও তারা খুন করেছে।ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।আর সেই রাতেই নিভে যায় বাংলার মানুষের আশা ভরসার সবচেয়ে আলোকিত ও উজ্জ্বলতম বাতিটি। বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে শোকের ঘন কালো ছায়া।এ যেন মৃত্যু নয় বরং নতুন করে বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকা।নানা শেখ আবদুল মজিদের কথা অনুযায়ী আজ সারা বিশ্বে “শেখ মুজিবুর রহমান “একটি নাম।বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু!

লেখকঃ তুষার মাহমুদ,
শিক্ষার্থীঃজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..