হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে গত ২০ মার্চ (বুধবার) যোগদান করেছেন ডা. শারমিন সুলতানা রয়েল। ডা. রয়েল বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের খাকদান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি মফিজউদ্দীন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি এবং আমতলী সরকারি কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। এইচএসসিতে গৌরবোজ্জ্বল ফলাফলের জন্য তিনি সেসময় ‘বোর্ড স্কলারশিপ’ লাভ করেন।
এরপর ২০১৯ সালে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) এর এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ থেকে ‘ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন’ ডিগ্রি এবং ২০২২ সালে বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), ময়মনসিংহ থেকে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধীনে মাইক্রোবায়োলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।
উল্লেখ্য, স্নাতক পর্যায়ে ভালো ফলাফলের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পবিপ্রবি থেকে “ডিন’স মেরিট অ্যাওয়ার্ড” অর্জন করেন।
ক্যাম্পাস জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি।
সেসময় তিনি ‘উপকূলীয় ছাত্র কল্যাণ সমিতি- বরগুনা’ এর সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘ভেটেরিনারি স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (ভিএসএ), পবিপ্রবি; রক্তদান সংগঠন ‘বাঁধন’ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রংধনু’, পবিপ্রবি এর সাথেও যুক্ত ছিলেন।
প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার আগে তিনি হবিগঞ্জ সদরে নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘ডা. রয়েল’স বার্ডস এন্ড পেট কেয়ার’ এ পোষা প্রাণী ও পাখির চিকিৎসা সেবা দিতেন, যা প্রাণী কল্যানার্থে ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের অনুভূতি প্রকাশকালে ডা. রয়েল বলেন, “একটা মেয়ের সফলতার পিছনে অনেকগুলো প্রগতিশীল মানুষের হাত রয়েছে আমার জীবনে। আমি যেমন সাপোর্টিভ বাবা ও ভাই পেয়েছি, তেমনি আমি সাতক্ষীরাতে পেয়েছি সাপোর্টিভ শ্বশুর বাড়ি ও একজন বন্ধুসুলভ স্বামী।
তবে সুখ ও দুঃখ যে পাশাপাশি অবস্থান করে সে সত্যও আমার জীবনে ব্যতিক্রম নয়। পারিবারিক প্রতিকূলতার মধ্যে আর্থিক অভাবের সময় ধার করা মাত্র তিন হাজার টাকা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলাম বাকৃবিতে মাস্টার্স করতে। যা ছিলো তখন দিবা-স্বপ্নের মত।
যাইহোক, মহান রবের দরবারে এখন লাখো কোটি শুকরিয়া শেষ পর্যন্ত আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরন করার জন্য এবং আমাকে এই মহান পেশা উপহার দেয়ার জন্য। যে পেশাকে বলা হয়ে থাকে ‘মানুষ গড়ার কারিগর এবং জাতি নির্মাতা!
এ নোবেল প্রফেশনে যুক্ত থেকে আমি আমার অর্জিত জ্ঞান, মেধা, শ্রম ও গবেষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং সেই সাথে দেশ ও দশের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে চাই”।
প্রসঙ্গত, ডা. রয়েল এখন স্বামী সন্তানসহ হবিগঞ্জেই বসবাস করেন। তার স্বামী ডা. সালাউদ্দীন ইউছুপও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে (হকৃবি) শিক্ষকতা করছেন। ডা. ইউছুপ ১০ মে ২০২৩ এ হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
ডা. রয়েল বলেন, “তিনি ডা. ইউছুপের সাথে একই সাথে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং এখন আবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজন একসাথে শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়েছেন, যা পরম সৌভাগ্যের”।
Leave a Reply