কবি নজরুল সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ উপলক্ষে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে চলে শহীদ মিনারের উপর জুতা পায়ে উচ্চস্বরে হিন্দি ডিজে গানের সাথে নাচ। অনুষ্ঠানস্থলের পাশের ভবনে চলছিল অনার্স প্রথম বর্ষের বিভিন্ন বিভাগের ইনকোর্স পরীক্ষা। এ সময় অনুষ্ঠানের উচ্চশব্দ পরীক্ষায় ব্যাঘাত করেছে বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) কলেজ ছাত্রলীগের আয়োজনে নবীনবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জুতা পায়ে শহীদ মিনার ভিডিতে ওঠে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। এমন ঘটনায় উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
একাধিক পরীক্ষার্থী জানান, দুপুর ১ টা থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই চলছিল উচ্চশব্দে গানের আওয়াজ। অনেক চেষ্টায়ও মনোযোগ বসাতে পারেননি উত্তরপত্রে। তাদের দাবি আমাদের কথা বিবেচনা করে অন্য যেকোনো স্থানে অনুষ্ঠান করতে পারতো প্রশাসন।
জানা যায়, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বাংলা, দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহ বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষা চলছিল।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের পরীক্ষার্থী লামিয়া মিম বলেন, শব্দের কারণে আমাদের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়েছে। উচ্চ আওয়াজে গান চলায় আমাদের পরীক্ষার হলে থাকা হল- অনেক শিক্ষার্থী গানের সাথে গলা মেলান। অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণের আগে কলেজ প্রশাসনের এই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত ছিল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দর্শন বিভাগের ১ম বর্ষের এক ইনকোর্স পরীক্ষার্থী বলেন, লিখার সময় উচ্চশব্দের কারণে অনেক জানা উত্তর স্মরণ করতে কষ্ট হচ্ছিল। একটু লিখে আবার ভুলে যাচ্ছিলাম। ফলে আমি ২০ মার্কের উত্তর দিতে পারিনি।
এ বিষয়ে কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, আমরা ভাবছিলাম প্রোগ্রামটা ছোট আকারেই হবে কিন্তু অনেক বড় হয়ে গেছে এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে উচ্চস্বরে হিন্দি ডিজে গান বাজায় পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের একাধিক নেতার শহিদ মিনারের উপর জুতা পরে শহিদ মিনারের অবমাননা করার ঘটনা সত্যি লজ্জা জনক। অধ্যক্ষ নিশ্চয়ই এ বিষয়ে অনুমতি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে আপাতত কোনরূপ মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। পরবর্তীতে সশরীরে আমার সঙ্গে দেখা করবেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার বলেন,কলেজ প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা নবীন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছি। সেখানে ছেলে মেয়েরা গানবাজনা করে আনন্দ করছিল।
শহিদ মিনার জুতা পায়ে উঠার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,শহিদ মিনারের জুতা পায়ে শুধু আমি নয় সেখানে অনেক টিচাররাও উঠে।আপাতত আমি একটু ব্যস্ত আছি সামনা-সামনি দেখা করে কথা বলব।
Leave a Reply